মাইগ্রেন কী এবং করনীয়

একটি ভিন্ন ধরনের মাথা ব্যথা হল মাইগ্রেন। মেয়েদের মাঝে এ রোগ বেশী দেখা যায়। তবে পুরুষেরও এ রোগ হতে পারে।

এই রোগ কেন হয়:

মাথার ভেতরের রক্তচলাচলের তারতম্যের কারণে এই রোগ হয়। রক্ত চলাচল কমে গেলে হঠাত্ করে চোখে সব অন্ধকার দেখা যায়, এবং পরবর্তীতে রক্ত চলাচল হঠাত্ বেড়ে গিয়ে প্রচন্ড মাথা ব্যথার
অনুভূতি তৈরী হয়।

চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি খাবার, জন্ম বিরতীকরণ ওষুধ, দুঃচিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম ইত্যাদির কারণে এই রোগের সূচনা হতে পারে।

কমন মাইগ্রেন:

মাথা ব্যথা, বমি ভাব এই রোগের প্রধান লক্ষণ।

তবে, অতিরিক্ত হাই-তোলা, কোন কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথা ব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে।

মাথার যে কোন অংশ থেকে এই ব্যথা শুরু হয়। পরবর্তীতে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। চোখের পেছনে ব্যথার অনূভূতি তৈরী হতে পারে। চোখের উপর হালকা চাপ দিলে আরাম বোধ হয়।

মাথার ২ পাশে কানের উপরে চাপ দিলে এবং মাথার চুল টানলে ভাল লাগে।

তখন শব্দ এবং আলো ভাল লাগেনা। কখনো কখনো অতিরিক্ত শব্দ এবং আলোতে মাথা ব্যথা বেড়ে যায়।

ক্লাসিকাল মাইগ্রেন:

এখানে চোখে দৃষ্টি সমস্যা যেমন চোখে উজ্জ্বল আলোর অনুভূতি, হঠাত্ অন্ধকার হয়ে যাওয়া, দৃষ্টি সীমানা সরু হয়ে আসা অথবা যে কোন এক পাশ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ হতে পারে। ২০ মিনিট স্থায়ী এই উপসর্গের পর বমির ভাব এবং মাথা ব্যথা শুরু হয় যা সাধারণত এক পাশে হয়।

দৃষ্টির সমস্যা ১ ঘন্টার বেশী স্থায়ী হলে ধরে নিতে হবে এটি মাইগ্রেন নয়। ব্রেইন অথবা চোখে অন্য কোন সমস্যার কারণে দৃষ্টির এ সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

মাথা ব্যথা বিহীন শুধুমাত্র ভিসুয়াল অরা বা দৃষ্টি সমস্যাও ক্লাসিকাল মাইগ্রেন এর লক্ষণ হতে পারে।

করণীয় :

যাদের এ রোগ আছে, তাদের অন্তত: দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুম আবশ্যক।

সে সব খাবার খেলে মাইগ্রেন শুরু হতে পারে সে সব খাবার যেমন কফি, চকলেট, পনির, আইসক্রীম, মদ ইত্যাদি বর্জন করা উচিত।

অধিক সময় উপবাস থাকা যাবে না।

জন্মবিরতীকরন পিল সেবন না করা শ্রেয়। প্রয়োজনে অন্য পদ্ধতি বেছে নেয়া ভাল।

পরিশ্রম, মানষিক চাপ এবং দীর্ঘ ভ্রমণ বর্জনের মাধ্যমে মাইগ্রেনের আক্রমণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

চিকিত্সা:

বার বার মাইগ্রেনের আক্রমণ কমানের জন্য পিজোটিফেন, অ্যামিট্টিপটাইলিন, বিটাব্লকার জাতীয় ওষুধ কার্যকর।

মাথা ব্যথা শুরু হলে প্যারাসিটামল, এসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ কার্যকর। বমির ভাব কমানোর জন্যে মেটোক্লোর প্রোমাইড, ডমপেরিডন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

উপরোল্লিখিত ওষুধে মাথা ব্যথা না কমলে সুমাট্টিপটান, আরগোটামাইন জাতীয় ওষুধে কোন কোন রুগী অনেক আরাম বোধ করেন। সবচেয়ে বড় কথা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং মানষিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এর মাধমে অনেক ক্ষেত্রেই এই রোগের বার বার আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। মনে রাখবেন, সব মাথা ব্যথা মাইগ্রেন নয়, দৃষ্টি স্বল্পতা, ব্রেইনটিউমার, মাথায় রক্তক্ষরণ ইত্যাদি কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে, সেক্ষেত্রে চোখের ডাক্তারের পাশাপাশি স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন পড়ে।

(বিঃ দ্রঃ আমার কখনো এ ধরনের সমস্যা হয় নাই। তাই আমি ভালো জানি না। ইন্টারনেট থেকে যতটুকু জেনেছি ততটুকুই লিখেছি)

0 comments:

Blogger Gadgets